সাহিত্যের ভাষা ও সংবাদপত্রের ভাষা

সাহিত্যের ভাষা সংবাদের ভাষা
ভাষার সঙ্গে আমাদের পরিচয় হয় মায়ের মুখে আর শুদ্ধ করে ভাষার পরিচয় করিয়ে দেবার ক্ষেত্রে সংবাদপত্রের ভূমিকা রয়েছে সংবাদপত্র যারা নিয়মিত পড়েন তাদের ভাষায় সংবাদপত্রে ব্যবহহৃত ভাষার একটা ছাপ পড়ে সংবাদ পত্রে সাহিত্যে ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা সংবাদপত্রকে সাহিত্য থেকে আলাদা করেছে সংবাদপত্রের ভাষার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে সংবাদপত্রের ভাষা সাহিত্যের ভাষা আলাদাপ্রথম চৌধুরীর মতে : “ভাষা মানুষের মুখ থেকে কলমের মুখে আসে, কলমের মুখ থেকে মানুষের মুখে নয়সাহিত্যের ভাষা কাব্যিক, তথ্য ভিত্তিক বর্ণনাত্মক, বিশ্লেষনাত্মক হতে পারে কিন্তু সংবাদের ভাষা অবশ্যই তথ্য ভিত্তিক হবে তবে বর্তমানে ফিচার ধর্মী সংবাদগুলো কিছুটা বিশ্লেষণাত্মক তবে তাও সাহিত্যের মতো কল্পনাশ্রিত নয়
সাহিত্যের কলেবরে শব্দ চয়ন ভাব আবেগ প্রকাশ করা হয় সংবাদপত্রের পাতায় সংবাদের তথ্যগুলো প্রকাশ করা হয়। আর তা না হলে কোনটা সংবাদ পরিবেশনা আর কোনটি কল্পিত বা রুপায়িত সাহিত্য তা আলাদা করা যাবে না। সাহিত্যের নূচনা লগ্নে সাহিত্য আজকের রুপে ছিলনা। সংবাদের শুরুর যুগে তাও আজকের মত বস্তুনিষ্ঠতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রকাশিত হয়নি।
অনেকগুলো কারণে সংবাদের ভাষা সাহিত্যের ভাষা আলাদা রুপ পরিগ্রহ করেছে। এটা কোনো মুহুর্তের কোনো সিদ্ধান্ত নয়। এটা শত বছরের পরিক্রমায় মানুষের চাহিদার আলোকে সংস্কার হয়ে আজকের এরুপে এসেছে। হয়তো আগামী দিনগুলোতে আজকের যেসব নিয়ম অনুসরণ করা হয় তাও যুগের আলোতে পরিবর্তন হবে
সংবাদপত্রের ভাষার কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট থাকে। যেমন, সংবাদপত্রের ভাষা হবে সহজ, সরল ,স্বচ্ছ যেন পাঠক শ্রোতা তা সহজেই বুঝতে পারেন। যেহেতু পাঠক-শ্রোতার মধ্যে যেমন সুপন্ডিত আছে, তেমনি রয়েছেন নামমাত্র সাক্ষর ব্যক্তি তাই এতে ব্যবহৃত ভাষা হবে সহজ যেন সকলেই তা বুঝতে পারেন। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে- “সহজ কথা বলতে আমায় কহযে, সহজ কথা যায় না বলা সহজে।
তবে কাজটি যতই কঠিন হোক না কেন সাংবাদিকের লেখাতে স্বচ্ছতা সরলতা থাকা প্রয়োজন
প্রথমত: প্রকাশের উদ্দেশ্য:
সাহিত্য বা গল্প কবিতা উপন্যাস ইত্যাদি প্রকাশের উদ্দেশ্য হলো এক ধরনের মননশীল বিনোদন বহন করা, পাশাপাশি পাঠককে সাহিত্যরসে জাগ্রত করা এবং স্বপ্ন কল্পনার এক মিশেল জগতে পরিভ্রমন করিয়ে এক ধরনের আস্বাদন দেয়া। ভাব আবেগকে কাজে লাগিয়ে কোনো কিছু বলার চেষ্টাও করা হয়। অন্যদিকে সংবাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নিরেট তথ্যপ্রবাহ। ঘটনাস্থল থেকে ঘটনাকে যতটা সম্ভব নির্ভুল এবং তথ্যপ্রমান সহ উপস্থাপন করাই হচ্ছে সংবাদের উদ্দেশ্য। সংগত কারনেই সাহিত্য এবং সংবাদের মধ্যে পার্থক্য থাকবে
দ্বিতীয়ত: পাঠকের চাহিদা:
সময়ের সাথে বদলে যায় অনেক কিছুই তেমনি সংবাদে পাঠকের চাহিদার সাথে সাথে বদলে গেছে সংবাদের ভাষা সংবাদের কাঠামো। পাঠক সাহিত্য পাঠের সময় রস আস্বাদন করতে চায়, কিছু ঘটনা কিছু বর্ননা আর কিছু বিশ্লেষন মিলিয়ে লেখকের তৈরী এক মায়াময় জগতে বসত করে থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু একই পাঠক যখন সংবাদ পাঠ করেন তখন তিনি সত্যিকার ঘটনাটা সহজ ভাষায় জানতে চান এবং ঘটনার পরিপূর্ণ রুপ কার্যকারণ সম্পর্কেও তার কৌতুহল জাগে পাঠকের এই কৌতুহল মেটানোর জন্য যখন সংবাদ লেখা হয় তখন তা সাহিত্যের পথ ধরে চলে না। তা চলে স্বাভাবিক ঘটনার বিবরনী আকারে
তৃতীয়ত: স্থান  সময়ের ব্যপ্তি
সাহিত্যকর্মের সব সময় এক ধরনের চাহিদা থাকে আর খবর যত তাজা থাকবে তত গরম থাকবে যত সময় গড়াবে তা ততই শীতল আবেদনহীন হবে ফলে দুটোর মধ্যে প্রকাশের ভঙ্গির পার্থক্যটা রয়ে যায়। খবর প্রকাশের জন্য পত্রিকার পাতায় স্থানের সীমাবদ্ধতা থাকে, টিভিতে থাকে সময়ের স্বল্পতা আবার পাঠকের রয়েছে জানার তাড়া আর অন্যদিকে সাহিত্যের জন্য বইয়ের পাতার সীমাবদ্ধতা অতটা প্রকট নয় আবার পাঠকের অতো তাড়াহুড়ো নেই
চতুর্থত: ভিন্ন ভিন্ন পাঠক
স্বভাবতই দুটো মাধ্যমের পাঠক ভিন্ন ভিন্ন রয়েছেন। খবর সব শ্রেনীর পাঠক পড়তে জানতে চায় কিন্তু সাহিত্যের পাঠক সব শ্রেনীর নয়। খবরের পাঠকরা সমাজের সর্বস্তরে বাস করেন আর সাহিত্যের পাঠকরা হলেন সমঝদার, তুলনামূলক পরিপক্ক চিন্তাশীল। ফলে এই দুই শেনীর রুচি এবং বোঝার ক্ষমতা দুটোই আলাদা
পঞ্চমত: নিয়মতান্ত্রিকতা:
গত কয়েকশ বছরের ইতিহাসে সংবাদপত্র সাংবাদিক নানা দায়বদ্ধতার মধ্য দিয়ে কাজ করে আসছে। দেশের আইন কানুনন সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতা সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি মাথায় রেখে সংবাদ পরিবেশন করতে হয়। অন্যদিকে সাহিত্যের ক্ষেত্রে অতো নিয়ম কানুন বা বিধি নিষেধের বালাই নেই। সমাজ রাস্ট্রবিরোধী কোনো বিষয় না হলে লেখক তার সাহিত্যকর্মকে নিজের মনের মাধূরী মিশিয়ে প্রকাশ করতে পারেন এর জন্য তাকে কোনো কাঠামো অনুসরণ বা পত্রিকার নীতিমালা মেনে চলতে হয়না। এমনকি সম্পাদকের চোখ রাঙানোর ভয়ও নেই
সংবাদপত্রে বাংলা ভাষার ইতিহাসঃ-
সংবাদপত্রের আবির্ভাবকালে বাংলা গদ্যের অবস্থা ছিলো অনেকখানি বিশৃঙ্খল। বাংলা গদ্যের আবির্ভাবের পর ১৮১৭-১৮১৮ সালে বাংলা সংবাদপত্রের যাত্রা শুরু হয়দিকদর্শনসমাচার দর্পন ‘‘তত্ববোধিনী’’ এর মাধ্যমে। পরবর্তীতেসংবাদ কৈমুদী” ‘জ্ঞান অন্বেষণএর আবির্ভাব হয়। ১৮৩৩ সালে সাপ্তাহিক হিসেবে যাত্রা শুরু করেসম্বাদ প্রভাকর ১৯৩৯ সালে বাংলাদৈনিক সম্বাদ প্রভাকরএর অভিযাত্রা শুরু।এতসব চাহিদা মেটাতে সংবাদপত্রের ভাষায় আসে অসমৃণ বৈচিত্র্য। ১৮১৮-১৮৫০ সালের মধ্যে বাংলা সাময়িকপত্র প্রকাশিত হলে বাংলাগদ্যের শৃংখলা আসতে শুরু করে। প্রথমদিকে অন্যসব দেশের সংবাদ প্রত্রের মতো আমাদের দেশেও রসাত্মক হালকা বিনোদন জাতীয় সংবাদের চাহিদা ছড়াছড়ি ছিলো। পরবর্তীতে কৃষ্ঞচন্দ্র মজুমদারের সম্পাদনায় ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় ‘‘ ঢাকা প্রকাশ’’ ১৮৬১ সালে
বর্তমানে গুনগত মান , নিরপেক্ষতা, শব্দ বাক্যের ব্যবহারে কি পরিমাণ ভুলত্রুটি প্রতিবেদনের সংবাদপত্রে চোখে পড়ে তাত অনেক ভাষাপ্রেমিক নাগরিকরা তাদের ক্ষোভ উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। সংবাদ পত্রে নানা অশ্লীল রাজণেতিক পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ পরিবেশন করা হয়। যা কারোরই কাম্য নয়
এখন আমরা দেখবো সংবাদ পত্রে ভাষা সাহিত্যের ভাষার মধ্যে কি কি ধরনের পার্থক্য রয়েছে
শিরোনাম :
গল্পে লেখার ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে নাম করণ এর বিভিন্ন নীতি থাকতে পারে। নানা উচ্চমার্র্ীয় শব্দ দ্বারা এর নাম করণ করা যেতে পারে। যেমন ‘‘ বেতাল পঞ্চবিংশতি’’ কিন্তু সংবাদের শিরোনাম হলো সম্পূর্ণ ঘটনার সার-সংক্ষেপ। তাই সাংবাদিককে শিরোনাম নির্ধারনে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।যেমন ইটালীয় মেয়েরা চ্যাম্পিয়ান। চ্যাম্পিয়ান মেয়ে নয়। যদি এটা গল্প বা উপন্যাস হতো তাহলে হয়তো এমন নাম হতো
ঘটনার ঘণঘটা:
সাধারণত সাহিত্যের ভাষায় একটা গল্প নাটক বা উপন্যাসে অনেকগুলো ঘটনা থাকতে পারে। থাকতে পারে লম্বা ইতিহাস এবং থাকতে পারে একাধিক ব্যক্তির জীবনের গল্প। কিন্তু একটি সংবাদে শুধুমাত্র একটি ঘটনার উপর আলোকপাত করা হয় এবং সে ঘটনাটাই প্রকাশ করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পূরক কোনো ঘটনা বা যোগসূত্র আছে এমন কোনো সংবাদের উল্লেখ থাকতে পারে।
যেমন: আবদুল্যাহ উপন্যাসে একটি সমাজ ব্যবস্থার নানা ঘটনাই উঠে আসে। কিন্তু ‘‘নারায়নগঞ্জে জোড়াখুন এখানে সংশ্লিষ্ট বর্নণা ছাড়া অন্য কিছু খুজে পাওয়া যায়না
বাহুল্য  বাহুল্যবর্জিত:
সাহিত্যে লেখক তার গল্প বর্ননা দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার জন্য মুল ঘটনার সাথে নানা কিছু জড়িয়ে দিতে পারেন। শব্দ বাক্য এমনকি বিবরনে নানা ব্যপ্তি ঘটাতে পারেন। সংলাপ নিজস্ব মতামত দিয়ে ঘটনা বা গল্পের কলেবর বৃদ্ধি করতে পারেন খুব সহজে ।একজন সাংবাদিক তা কখনো পারেন না। তা তার পেশাগত নীতি সততার পরিপন্থী, তাকে তার পাঠকদের কাছে বাহুল্যবর্জিত সাদামাটা সংবাদটা পরিবেশন করতে হবে।
যেমন: সিলেটে নূরজাহান দোররা মারার ঘটনা পত্রিকার কয়েক কলাম বা কয়েকটি সংবাদে শেষ হয়েছে। কিন্তু জনপ্রিয় লেখক ইমদাদুল হক মিলন যখন এই ঘটনা নিয়ে উপন্যাস রচনা করলেন তখন তা বিশাল বই হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক ঘটনা বর্ননা চরিত্র সংলাপ অনেক কিছুই যুক্ত হয়েছে
অলংকারযুক্ত  অলংকারমুক্ত:
সাহিত্যকে সাহিত্যের বিচারে সার্থক হওয়ার জন্য এ্র প্রতিটি পর্যয়ে নানা রুপক অলংকার যোগ করতে হয়। এতে করে প্রতিটি সাহিত্যকর্মে আলাদা আলাদা স্বাদ তৈরী হয় এবং এর পাঠে ভিন্ন ভিন্ন অনুভতি আসে। কিন্তু একটি সংবাদ পারিবেশনের সময় এমনটা করা যায়না কারণ এতে করে সংবাদের মূল সত্য ঢাকা পড়ে যেতে পারে এবং আবেদনটা নষ্ট হয়ে যায়। যদিও আমাদের দেশে পেশাদারিত্বের অভাবে খুব কম ক্ষেত্রেই এটা মানা হয়।
যেমন: কবি জসীম উদ্দীন তার নকশী কাথার মাঠ কাব্যগ্রন্থে লিখেছেন ‘‘ লাল মোরগের পাখার মত উড়ে তাহার শাড়ী/ ভোরের হাওয়া যায় যেনগো প্রভাতী মেঘ নাড়ি’’ এখন একজন সাংবাদিক একটি গ্রামে সংবাদ পরিদর্শন করতে গিয়ে তিনি সংবাদে সংশ্লিষ্ট পাত্র বা পাত্রী সম্পর্কে ধরনের উপমা দিতে পারেন না
যুক্তির প্রশ্নে:
সাহিত্য ঘটনা বক্তব্য প্রকাশে নিরঙকুশ যুক্তি তর্ক প্রয়োজন নেই। এখানে রুপকথাও থাকতে পারে, থাকতে পারে কল্পবিজ্ঞান। কিন্তু সংবাদ পরিবেশনের সময় যুক্তির নিরিখে যাচাই হতে হবে। যে অভিযোগ আনা হবে তার প্রয়োজনীয় স্বাক্ষ্যপ্রমাণ থাকাও বাঞ্চনীয়। ফলে এই কাঠামোগত বিভেদ সাহিত্যের ভাষা সংবাদের ভাষাকে স্পষ্টই আলাদা করে দিয়েছে।
উদাহরণ স্বরুপ আমরা বলতে পারি: হুমায়ন আহমেদের মিসির আলী গল্পের অনেক ঘটনায়। যেমন নীলার মৃত্যর পরও মিসির আলী দেখতে পান যে তার ক্লাসে অবিকল নীলার মতোই একটি মেয়ে বসে আছে। এর কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। কিন্তু নারায়নগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় নূর হোসের কেন জড়িত থাকতে পারে প্রতিবেদককে এ্র যুক্তি প্রমান উপস্থাপন করতে হয়েছে
কল্পনা  বাস্তবতা:
সাহিত্যের ভাষায় কল্পনা বাস্বতবের মিশেল থাকতে পারে। একটি সাহিত্যকর্ম হতে পারে পুরোটাই কল্পনা মিশ্রিত। যেমন হ্যারিপাটার। সংবাদে জল্পনা কল্পনার কোনো স্খান নেই। এমনকি সংবাদ লিখক বা সম্পাদক নিজেদের অনুমান নির্ভর কোনো বক্তব্য এতে জুড়ে দিতে পারেন ন। যেমন সাগর রুনিকে কারা হত্যা করেছে এটা একজন প্রতিবেদক কল্পনার ভিত্তিতে লিখতে পারে না। বা সংবাদ এর ভাষায় কল্পনার স্থান নেই।
শব্দের সঠিক ব্যবহার :
সংবাদপত্রে খবর প্রকাশের জন্য সঠিক স্থানে সঠিক শব্দটি বসানো প্রয়োজনীয়। প্রসঙ্গে বুদ্ধদের বসু বলেন-“ঠিক জায়গায় ঠিক কথাটি বসানোতেই লেখকের বিশেষত্বসঠিক স্থানে সঠিক শব্দ ব্যবহৃত হলে ব্যবহৃত ভাষায় প্রাঞ্চলতা আসে। কিন্তু সাহিত্য রচনার সময় এটা একশতে একশ মানতে হয়না। রুপক বা প্রচলিত অর্থ বোঝানোর জন্য লেখক ভিন্ন কিছু শব্দ ব্যবহার করতে পারেন। ‘‘ যেমন একজন গীতিকার খুব সহজেই লিখতে পারেন যে, ‘‘ নজরে নজরে, রাখিয়া আমারে, পিরিতের বাণ মারিলা’’ কিন্তু একজন সাংবাদিক দুইটি নরনারীর প্রেম কাহিনী লিখতে গিয়ে এটা লিখতে পারে না। তাকে লিখতে হবে। দীঘদিন একসাথে কাজ করার কারনে তাদের মধ্যে হৃদ্যতা গড়ে ওঠে
সরল বাক্যের প্রয়োগ: :
সাহিত্যকর্মে লেখকের পান্ডিত্য সাহিত্যে আভিজাত্য প্রকাশ করার জন্য জটিল কঠিন বাক্য ব্যবহার হতে পারে। কিন্তু সংবাদ পত্রে জটিল যৌগিক বাক্য ব্যবহার না করে ছোট সরল বাক্যের ব্যবহার অর্থকে সহজবোধ্য করে, ভাষাতে আসে গতিশীলতা
গবেষনায় দেখা গেছে, একেকটি বাক্যে পনেরটির বেশি শব্দ ব্যবহৃত হলে তা আর সহজবোধ্য থাকে না, এতে পাঠকের অসুবিধা হয়। এছাড়া বাক্যের পদ বিন্যাস রীতি খেয়াল করতে হয়
বাংলা বাক্যের প্রথমে কতৃপদও সর্বশেষ ক্রিয়াপদ বলে যা অনেক সময় সংবাদপত্রে অনুসৃত হয়
ভাষা সহজ  প্রচলিত:
সাহিত্যের ভাষার ক্ষেত্রে নীতি সব সময় খাটেনা। কখনো কখনো জটিল ভাষার সাহিত্য উপভোগ্য সার্থক সাহিত্যকর্ হয়ে উঠে। যেমন ‘‘কপালকুন্ডলা’’ কিন্তু সংবাদ লেখার জন্য সব সময় একই নিয়ম প্রযোজ্য তা হলো এর ভাষা হবে সহজ সংক্শিপ্ত এবং প্রচলিত।সাহিত্যির গগন, পবন, বিহঙ্গ এসব লিখরেতই পারেন। কিন্তু সাংবাদিককে লিখতে হবে, আকাশ, বাতাস পাখি
ভাষা মানুষের ভাব প্রকাশের বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই ভাষার ভিন্নতাও মানুষের ভাব প্রকাশের ভিন্নতার কারণে হয়ে থাকে। দেশ জাতি ভিন্নতায় ভাষা যেমন ভিন্ন হয়েছে মানুষের ভিন্ন ভিন্ন আবেগ অনূভতি প্রকাশের জন্য ভাষার ভিন্ন ভিন্ন রুপ হয়েছে। বর্তমানে ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে ভাষার ব্যবহারের ভিন্নতা রয়েছে। একান্ত বাস্তবিক এবং প্রায়োগিক কারণে এই ভিন্নতা সৃষ্টি ব্যবহার হয়ে আসছে। মানুষের বক্তৃতায় ভাষার প্রকাশ যেমন আর নাটকের সংলাপে ভাষার প্রকাশ একই নিয়ম মেনে হয়না
তথ্যসূত:
সাংবাদিকের ভাষা : আবদুর রহমান খান, রেডিও তেহরান/এআরকে/এআর/
সংবাদপত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহার: ” (নিরীক্ষা আগস্ট , ১৯৮৯ )
সংবাদপত্রের ভাষা: নিরীক্ষা
সাংবাদিকতা: মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর

No comments

Featured Post

এক্সপোজার (Exposure) কি?

এক্সপোজার (Exposure) আমরা জেনেছি ক্যামেরার ফিল্ম   বা   সেন্সর যখন আলোতে exposed হয় , অর্থাৎ আলোর সংস্পর্শে আসে তখন ফিল্ম / সে...

Powered by Blogger.